আমরা জানি, বিভিন্ন স্থানান্তরযোগ্য দ্রব্যসামগ্রী ও মানুষকে একস্থান থেকে অন্যস্থানে পৌঁছে দেওয়াকে #পরিবহন বলে। এবং পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত রাস্তা,যানবাহন ও নিয়মকানুনকে একসঙ্গে #পরিবহন #ব্যবস্থা বলে।আবার এই পরিবহন ব্যবস্থাকে কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। যথা- স্থলপথ,জলপথ,আকাশপথ এবং রেলপথ।
চলুন আজ আমরা ভারতীয় রেলপথ কে আরো একটু বিস্তারিত ভাবে জানি!
>> বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম রেলপথ পরিষেবা দেবার কৃতিত্ব ভারতীয় রেল এর দখলে।
>> ভারতের সব থেকে বেশী কর্মসংস্থান হয় এর মাধ্যমে।
>> কথায় আছে যে, ভারতীয় রেলের ট্র্যাক বা লাইন যতটা দীর্ঘ তাতে এই গোটা পৃথিবীটার ওপরে একবার নয় দেড়বার বসিয়ে ঘিরে ফেলা যাবে।
>> বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম প্ল্যাটফর্ম ভারতীয় রেলেই আছে। ১.৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সেই প্ল্যাটফর্মের নাম গোরক্ষপুর (Gorakhpur)। স্টেশনটি উত্তরপ্রদেশে অবস্থিত।
>> ভারতের সবচেয়ে বড় নামের রেল স্টেশনের নাম হলো 'Venkatanarasimharajuvaripeta।
>> ভারতের সবচেয়ে ছোট নামের স্টেশনের নাম 'আইবি'। 'IB' নামের স্টেশনটি ওডিশায় অবস্থিত। এ ছাড়াও গুজরাটের এক রেল স্টেশনের নাম 'ওডি' (Od)।
>> উচ্চতায় আইফেল টাওয়ারের থেকে ৩৫ মিটারের বেশি। বিশ্বের সবথেকে উঁচু রেলব্রিজ ভারতেই আছ। উল্টোনো 'ইউ' আকৃতির এই ব্রিজটি নির্মাণ করা হয় জম্মু ও কাশ্মীরের পাহাড়শ্রেণী ও চেনাব নদীর সংযোগস্থলে। ব্রিজটি ৩৫৯ মিটার উঁচু।
>> ১৯৮৬ সালে ভারতীয় রেলে প্রথমবার কম্পিউটারাইজড টিকিট সংরক্ষণ বা রিজার্ভেশনের নিয়ম চালু হয়। ২০১৪ সালে ভারতীয় রেলের মোবাইল অ্যাপ চালু হয়।
>> ভারতীয় রেল এ ১৭টি আঞ্চলিক বিভাগ রয়েছে।
>> অতএব ভারতীয় রেলকে “জাতীয় জীবনরেখা” বলাটা যে যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে বিতর্কের কোনো রাস্তা নেই।
ভারতীয় রেলপথের এই অংশটি তাঁর ঐতিহ্যের সাক্ষী বহন করে চলেছে বিগত ১৩৫ বছর ধরে। ভারতের পার্বত্য রেলপথ হল সারা বিশ্বে চালু অনুরূপ ২০টি ন্যারো বা মিটার-গেজ রেলপথের মধ্যে ভারতে চালু ছয় বা সাতটি ছোটো রেলপথ। এই লাইনগুলি চালু হয়েছিল ব্রিটিশ শাসনকালে। এগুলি আজও চালু অবস্থাতেই আছে। বর্তমানে এগুলি ভারতীয় রেলের নিয়ন্ত্রণাধীন।
#ইতিহাসঃ-
------------------
ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় যে, ১৮৪৪ সালে ভারতের তদনীন্তন ভাইসরয় স্যার জন লরেন্স এর মাথায় ‘হিল রেলওয়ে’গঠন করার চিন্তা শুরু হয়। এবং অবশেষে যে শৈলশহরগুলি এই জন্য নির্বাচিত হল সেগুলি ছিল- ব্রিটিশ ভারতের ‘গ্রীষ্মকালীন রাজধানী’ #শিমলা; অধুনা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে অবস্থিত #দার্জিলিং, যা চা বাগান ও পূর্ব হিমালয়ের সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত; অধুনা হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের #কাংড়া উপত্যকা; তামিলনাড়ুর নীলগিরি পর্বতমালার #ঊটকামান্ড এবং মুম্বই শহরের কাছে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার #মাথেরন শৈলশহর। ১৮৭৮ সালে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলপথের নির্মাণকার্য শুরুর মাধ্যমে এর পথ চলা শুরু।
------------------
ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় যে, ১৮৪৪ সালে ভারতের তদনীন্তন ভাইসরয় স্যার জন লরেন্স এর মাথায় ‘হিল রেলওয়ে’গঠন করার চিন্তা শুরু হয়। এবং অবশেষে যে শৈলশহরগুলি এই জন্য নির্বাচিত হল সেগুলি ছিল- ব্রিটিশ ভারতের ‘গ্রীষ্মকালীন রাজধানী’ #শিমলা; অধুনা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে অবস্থিত #দার্জিলিং, যা চা বাগান ও পূর্ব হিমালয়ের সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত; অধুনা হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের #কাংড়া উপত্যকা; তামিলনাড়ুর নীলগিরি পর্বতমালার #ঊটকামান্ড এবং মুম্বই শহরের কাছে পশ্চিমঘাট পর্বতমালার #মাথেরন শৈলশহর। ১৮৭৮ সালে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলপথের নির্মাণকার্য শুরুর মাধ্যমে এর পথ চলা শুরু।
#ভারতের পার্বত্য রেলপথগুলোর তালিকাঃ-
--------------------------------------------------------
--------------------------------------------------------
১. দার্জিলিং হিমালয়ান রেল
২. নীলগিরি পার্বত্য রেলপথ
৩. কালকা-সিমলা রেলওয়ে
৪. মাথেরন পাহাড়ি রেলপথ
৫. কাংড়া উপত্যকা রেলপথ
২. নীলগিরি পার্বত্য রেলপথ
৩. কালকা-সিমলা রেলওয়ে
৪. মাথেরন পাহাড়ি রেলপথ
৫. কাংড়া উপত্যকা রেলপথ
@@ এছাড়াও যেগুলি নির্মানাধিন সেগুলি হল-
১. কাশ্মীর রেল
২. বিলাসপুর-মান্ডি-লেহ রেল
১. কাশ্মীর রেল
২. বিলাসপুর-মান্ডি-লেহ রেল
===============================================
১) #দার্জিলিং হিমালয়ান রেল
১৮৭৮ সালে দার্জিলিং হিমালয়ান রেলপথের নির্মাণকার্য শুরু হয়। এরই সঙ্গে সঙ্গে পার্বত্য যাত্রীবাহী রেলপথের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সমৃদ্ধ পার্বত্য একালাগুলিকে সমতলের সঙ্গে যুক্ত করার কাজ শুরু হয়। তদনীন্তন পূর্ববঙ্গ রেলের ফ্র্যাঙ্কলিন প্রেস্টিজ হিলকার্ট রোড বরাবর শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত একটি পার্বত্য ট্রামওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। নির্মাণকাজ শুরু হয় এবং ১৮৮১ সালে দার্জিলিং পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণের কাজ শেষ হয়।
#এক #নজরে #দার্জিলিং #হিমালয়ান #রেল
** দার্জিলিং হিমালয়ান রেল এর প্রধান আকর্ষণ হল ট্রয় ট্রেন।
** ‘টয় ট্রেন’ হল একটি ৬১০ মিলিমিটার (২ ফুট) ন্যারো গেজ রেলপথ।
** ৮৮ কিলোমিটার পথ জুরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং শহরকে শিলিগুড়ির সঙ্গে যুক্ত করেছে।
** এই রেললাইনের উচ্চতা শিলিগুড়িতে ১০০ মিটার এবং দার্জিলিং-এ ২,২০০ মিটার ।
** ঘুম শহরে এই উচ্চতা সর্বাধিক - ২,৩০০ মিটার (৭,৫০০ ফু)।
** এটিই ভারতের পার্বত্য রেলের প্রথম লাইন যেটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের স্বীকৃতি পেয়েছিল।
**এই রেললাইন বরাবর বিভিন্ন সাইনবোর্ডের মাধ্যমে পর্যটকদের কতকগুলি বিশেষ জায়গা চিনিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এই জায়গাগুলির নাম ‘অ্যাগোনি পয়েন্ট’, ‘সেনসেশন কর্নার’ ইত্যাদি।
** ‘টয় ট্রেন’ হল একটি ৬১০ মিলিমিটার (২ ফুট) ন্যারো গেজ রেলপথ।
** ৮৮ কিলোমিটার পথ জুরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দার্জিলিং শহরকে শিলিগুড়ির সঙ্গে যুক্ত করেছে।
** এই রেললাইনের উচ্চতা শিলিগুড়িতে ১০০ মিটার এবং দার্জিলিং-এ ২,২০০ মিটার ।
** ঘুম শহরে এই উচ্চতা সর্বাধিক - ২,৩০০ মিটার (৭,৫০০ ফু)।
** এটিই ভারতের পার্বত্য রেলের প্রথম লাইন যেটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের স্বীকৃতি পেয়েছিল।
**এই রেললাইন বরাবর বিভিন্ন সাইনবোর্ডের মাধ্যমে পর্যটকদের কতকগুলি বিশেষ জায়গা চিনিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এই জায়গাগুলির নাম ‘অ্যাগোনি পয়েন্ট’, ‘সেনসেশন কর্নার’ ইত্যাদি।
২) #কালকা–শিমলা রেল
শিমলা হল অধুনা ভারতের হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের রাজধানী। কালকা হল অধুনা হরিয়ানা রাজ্যের পঞ্চকুলা জেলার একটি শহর। ১৮৯৮ সালে দিল্লি-আম্বালা-কালকা রেলওয়ে কোম্পানি শিবালিক পর্বতমালায় রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু করে এবং ১৯০৩ সালের ৯ নভেম্বর কাজ শেষ হয়।
#এক #নজরে #কালকা–শিমলা #রেল
**এটি ৯৫.৬৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং 2 ft 6 in ন্যারো গেজ লাইন।
**এই লাইনে ১০৩টি টানেল ও ৮৬৪টি সেতু রয়েছে।
**একটি সেতু ১৮.২৯ মিটার দীর্ঘ।ভূমির ঢাল ১: ৩৩ বা ৩%। ৩১৯টি বাঁক আছে। সবচেয়ে সংকীর্ণ বাঁকটি ৪৮ ডিগ্রি।
**এই লাইনে ১০৩টি টানেল ও ৮৬৪টি সেতু রয়েছে।
**একটি সেতু ১৮.২৯ মিটার দীর্ঘ।ভূমির ঢাল ১: ৩৩ বা ৩%। ৩১৯টি বাঁক আছে। সবচেয়ে সংকীর্ণ বাঁকটি ৪৮ ডিগ্রি।
৩) #মাথেরান পার্বত্য রেল
#এক #নজরে #মাথেরান #পার্বত্য #রেল
**এই রেলপথ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল ১৯০১ সালে এবং শেষ হয় ১৯০৭ সালের মধ্যে।
**তৈরি করেছিলেন হুসেন আসমজি পিরভোয় এবং অর্থসাহায্য করেছিলেন তাঁর বাবা স্যার আদমজি পিরভোয় (আদমজি গোষ্ঠীর)।
**এই লাইনের বৈশিষ্ট্য হল অশ্বখুরাকৃতি তীর। ক্ষয় রোধ করার জন্য তৈরি এই তীরগুলি।
#এক #নজরে #মাথেরান #পার্বত্য #রেল
**এই রেলপথ তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল ১৯০১ সালে এবং শেষ হয় ১৯০৭ সালের মধ্যে।
**তৈরি করেছিলেন হুসেন আসমজি পিরভোয় এবং অর্থসাহায্য করেছিলেন তাঁর বাবা স্যার আদমজি পিরভোয় (আদমজি গোষ্ঠীর)।
**এই লাইনের বৈশিষ্ট্য হল অশ্বখুরাকৃতি তীর। ক্ষয় রোধ করার জন্য তৈরি এই তীরগুলি।
৪) #কাংড়া উপত্যকা রেল
#এক #নজরে #কাংড়া #উপত্যকা #রেল
** পাঠানকোট থেকে যোগিন্দরনগর পর্যন্ত প্রসারিত ১৬৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথটি বিস্তৃত।
** এই লাইন তৈরির পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল ১৯২৬ সালে।
**এবং ১৯২৯ সালে এই রেলপথ চালু হয়।
-----------------------------------------------------------------
** পাঠানকোট থেকে যোগিন্দরনগর পর্যন্ত প্রসারিত ১৬৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথটি বিস্তৃত।
** এই লাইন তৈরির পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছিল ১৯২৬ সালে।
**এবং ১৯২৯ সালে এই রেলপথ চালু হয়।
-----------------------------------------------------------------
@@এছাড়াও যেগুলি নির্মানাধিন সেগুলি হল-
+++++++++++++++++++++++++++++++
১) #কাশ্মীর রেল- এই রেলপথের মাধ্যমে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যটি ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছে। এই রেল প্রকল্পের সরকারি নাম ‘জম্মু উধমপুর শ্রীনগর বারামুলা রেলওয়ে লিঙ্ক’। জম্মু থেকে শুরু করে ৩৪৫ কিলোমিটার দূরে বারামুলা শহর পর্যন্ত এই রেলপথ প্রসারিত হবে।
২) #বিলাসপুর-মান্ডি-লেহ রেল নির্মানকার্য শেষের পর বিশ্বের উচ্চতম রেলপথ হবে।
----------------------------------------------------------------------------------
#ইউনেস্কো #বিশ্ব #ঐতিহ্যবাহী #স্থান
----------------------------------------------------------------------------------
#ইউনেস্কো #বিশ্ব #ঐতিহ্যবাহী #স্থান
ভারতের পার্বত্য রেলপথগুলির মধ্যে তিনটিকে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছে।এই তিনটি কে চিহ্নিত করার মানদণ্ড গুলি হল-
অ) দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে কার্যকরী রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনা। এবং
আ) সাহসী ও মেধাদীপ্ত ইঞ্জিনিয়ারিং সমাধানের জন্য।
অ) দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে কার্যকরী রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনা। এবং
আ) সাহসী ও মেধাদীপ্ত ইঞ্জিনিয়ারিং সমাধানের জন্য।
#যেই #তিনটি স্থান কে চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলি হল-
অ) দার্জিলিং হিমালয়ান রেল (১৯৯৯ সালে)
আ) নীলগিরি পার্বত্য রেল (২০০৫ সালে)
ই) কালকা-শিমলা রেল (২০০৮ সালে)
আ) নীলগিরি পার্বত্য রেল (২০০৫ সালে)
ই) কালকা-শিমলা রেল (২০০৮ সালে)
Edited by-Rajkumar Guria
*****ভারতের পার্বত্য রেলপথের ঐতিহ্য*****
Reviewed by ভূগোল প্রেমী
on
মার্চ ১৭, ২০১৭
Rating: